
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক–দোয়ারাবাজার) আসনে তৈরি হয়েছে চমকপ্রদ পরিস্থিতি। দক্ষিণ ছাতকের দোলারবাজার ইউনিয়নের তিনটি গ্রামের তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামায় এ আসনের নির্বাচনী সমীকরণে এসেছে নতুন মোড়। শিল্পনগরী খ্যাত ছাতক ও সীমান্তবর্তী দোয়ারাবাজারের এ আসনে বরাবরই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়; তবে এবারের প্রতিযোগিতা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত।
বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে আসনটি নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসে। উপমহাদেশের প্রখ্যাত বুযুর্গ শামসুল উলামা আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌধুরী ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের প্রার্থী মাঠে নামায় পুরো হিসাব-নিকাশে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন।
দোলারবাজার ইউনিয়নের চেলারপাড়, কল্যাণপুর ও জটি—এই তিন গ্রাম থেকে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তিন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যার মধ্যে দুজনই ইসলামী সংগঠনভুক্ত অভিজ্ঞ আলেম।
প্রার্থীরা হলেন—
মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী, গোবিন্দনগর ফজলিয়া সিনিয়র আলিয়া মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ, সিলেট জেলা জামায়াতের শূরা সদস্য ও দলীয় প্রার্থী।
মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী, বুরাইয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ; বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী।
জয়নাল আবেদীন, মানবাধিকারকর্মী ও লন্ডনপ্রবাসী স্বতন্ত্র প্রার্থী।
একই ইউনিয়নের তিন গ্রাম থেকে প্রার্থী দাঁড়ানোয় দোলারবাজার এলাকায় ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল তুঙ্গে। স্থানীয়রা বলছেন, এতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী হবে।
বারগোপি গ্রামের বাসিন্দা কামাল আহমদ বলেন, “একই ইউনিয়নের তিন ব্যক্তি প্রার্থী হওয়া অস্বাভাবিক নয়। পাঁচজনও হতে পারে। প্রতিযোগিতাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য—ভোটাররাই সঠিক প্রার্থী বেছে নেবেন।”
জামায়াতের প্রার্থী মাওলানা আব্দুস সালাম আল মাদানী বলেন, “দলের মনোনয়ন পেয়ে মাঠে নেমেছি। জনগণের সাড়া অত্যন্ত ভালো। বিজয় আসবে ইনশাআল্লাহ।”
স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী বলেন, “দুজন আলেম ও একজন লন্ডনী প্রার্থী মাঠে থাকা কোনো বিভাজন তৈরি করবে বলে মনে করি না। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে, জোরেশোরেই লড়াই করছি; প্রচারণায় ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি।”
মানবাধিকারকর্মী জয়নাল আবেদীনও আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, “প্রতিযোগিতা গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। মাঠে মানুষের কাছে যাচ্ছি; ভালো ফলের আশা করছি।”
এদিকে পুরো নির্বাচনী সমীকরণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন—দলের কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও তিনবারের সাবেক এমপি। আলেম-ওলামাদের মধ্যে বিভাজনের কারণে মিলন এবার আরও শক্ত অবস্থানে আছেন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।
মন্তব্য করুন