![]() |
| ছবি : সংগ্রহকৃত |
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে, যার কারণে সিলেট বিভাগের চার জেলার মানুষ তীব্র ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ গোলচত্বর, সরাইল বিশ্বরোড এবং শাহবাজপুর এলাকায় ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়েছে। প্রায় ২০ কিলোমিটার বেহাল সড়কে খানাখন্দ থাকায় এই পথ পাড়ি দিতে লেগে যাচ্ছে কয়েক ঘণ্টা।
মৌলভীবাজার থেকে ঢাকায় সড়ক পথে যাতায়াত এখন দুর্বিষহ। ট্রেনের টিকিট সংকটে সড়কপথ ব্যবহারকারীদের জন্য মহাসড়কটি এখন ‘মৃত্যুফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, আগে যে পথ পাড়ি দিতে চার-পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগতো, এখন লাগছে ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা। এক যাত্রী চরম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “কয়েক মাস যাবত ঢাকা-মৌলভীবাজার আসা-যাওয়ার সময় চার-পাঁচ ঘণ্টা লাগতো, এখন ১৬-১৭ ঘণ্টা লাগে।” আরেক যাত্রী জানান, তিনি সকাল ১০টায় বাসে রওনা দিয়ে রাত ১১টায় গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
শারীরিক কষ্টের কথা উল্লেখ করে এক ভুক্তভোগী বলেন, “দীর্ঘ যানজট এড়িয়ে গাড়িতে আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক যাত্রী অসুস্থ হয়েছে, এমনকি বমি করার অবস্থা হয়েছিল।”
চালকরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন সড়কের কাজ না হওয়ায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে, যা চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। বিশেষ করে বিশ্বরোড থেকে আশুগঞ্জ পর্যন্ত কোনো কোনো দিন ১৭-১৮ ঘণ্টা, এমনকি ২৪ ঘণ্টাও সময় লেগে যাচ্ছে। তারা বলছেন, পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় লাগছে। এক বাসচালক বলেন, “রাস্তার এমন দশা! আট-নয় ঘণ্টা শুধু জ্যামে লাগে। যাত্রীর কষ্ট, আমাদের গাড়ির কষ্ট সবচেয়ে বেশি হচ্ছে।”
রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে শুধু যাত্রীরাই ভোগেন না, পরিবহন খাতও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গর্তে পড়ার ফলে গাড়ির যন্ত্রাংশ যেমন সাসপেনশন, পেছনের বডি ও সাইডের মাডগার্ড ভেঙে যাচ্ছে। এতে পরিবহন সংস্থার খরচ বাড়ছে এবং দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়েছে। পরিবহন সংস্থার সংশ্লিষ্টরা জানান, যাত্রীসংখ্যা কমে যাওয়ায় গাড়ির আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। দীর্ঘ যানজট এবং সড়কের খারাপ অবস্থার কারণে যাত্রীদের সময়, ভোগান্তি ও ব্যয় বাড়ছে।
জনসাধারণ দ্রুত এই সংকট নিরসনে সরকারের কার্যকর উদ্যোগের দাবি জানিয়েছেন। সচেতন মহল আশা করছে, প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে এবং ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাতায়াতকে নিরাপদ ও দ্রুতগামী করবে।
মন্তব্য করুন