সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের গঙ্গাজল গ্রামে পারিবারিক জমির বিরোধ নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বহুদিনের রেষারেষির জেরে চাচাতো ভাইদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নারীসহ অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন। এলাকায় আবারও অশান্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ২ ডিসেম্বর বিকেল পাঁচটার দিকে।
স্থানীয়রা জানান, মৃত আব্দুছ ছাত্তার, আব্দুল মন্নান, আব্দুল হান্নান ও মাহমুদ হোসাইনের পরিবারের মধ্যে বাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। বিষয়টি আদালতে স্বত্ব মোকদ্দমা (মামলা নং–৮৭/২০২৫) হিসেবে বিচারাধীনও রয়েছে।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে মৃত আব্দুল মন্নানের দুই ছেলে—আফজল হোসেন (৩২) ও এনাম উদ্দিন (৪০)—কিছু লোকজন নিয়ে হিফজুর রহমানের ঘর সংলগ্ন পুকুর ভরাট করতে যান। নাজিম উদ্দীনের পরিবার বাধা দিলে উত্তেজনা মুহূর্তেই সংঘর্ষে রূপ নেয়। হামলায় হিফজুর রহমান ও নাজিম উদ্দীনের স্ত্রীসহ পাঁচজন গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন আফজল ও এনাম উদ্দিন। তাদের সঙ্গে গুলজার হোসেন, নুরুর রহমান, হাসান আহমদ এবং কসকনকপুর ইউনিয়নের বিয়াবাইল গ্রামের আব্দুল কাইয়ুমও ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল কাইয়ুম বিবাদীপক্ষের আত্মীয় বলেও জানা গেছে।
ঘটনার পরে আহতের পরিবার থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্তে নেমে প্রাথমিক সত্যতা পায়। পরদিন রাতে অভিযান চালিয়ে সংঘর্ষের মূল দুই অভিযুক্ত—আফজল হোসেন ও এনাম উদ্দিন—কে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
চাঞ্চল্যের বিষয় হলো—গ্রেফতার হওয়া দু’জনই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আফজল হোসেন দরিয়াপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এনাম উদ্দিন গণিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
বাদী নাজিম উদ্দীনের ভাই সাব্বির আহমদ বলেন, “আমাদের পিতার ক্রয় করা জায়গা তারা জোর করে দখল নিতে চাইছে। শিক্ষকতার পরিচয়ে বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। সুযোগ পেয়ে হামলা চালানো হয়েছে।”
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এএসআই মো. সেকান্দর আলী বলেন, “ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেফতার হওয়া দুইজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বলছেন—শিক্ষকের মতো মর্যাদাপূর্ণ পেশাজীবীর এমন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া সমাজের জন্য লজ্জাজনক। তারা নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন