রংপুর রাইডার্সের বিজয় রথ থামিয়ে দুর্বার রাজশাহীর স্মরণীয় জয়

ছবি: সংগ্রহকৃত 

বিপিএল ২০২৫-এর চলতি আসরে রংপুর রাইডার্স ছিল অপরাজিত, একে একে প্রতিপক্ষদের চূর্ণবিচূর্ণ করে একের পর এক দুর্দান্ত জয় তুলে নিচ্ছিল তারা। কিন্তু অবশেষে চট্টগ্রাম পর্বের শেষ ম্যাচে রাজশাহী তাদের অপ্রতিরোধ্য যাত্রাকে থামিয়ে দিল, ২৪ রানে রংপুরকে পরাজিত করে রাজশাহী আশা জাগিয়েছে প্লে-অফে ওঠার।

বিপিএলে এই পর্যন্ত একটিও হার না মেনে রংপুর রাইডার্স ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম দাবিদার। তবে রাজশাহীর কাছে এই হার তাদের জন্য সতর্কবার্তা, যেখানে নিজেদের ব্যাটিং ও বোলিং বিভাগে আরও অনেক কিছু শোধরানোর সুযোগ দেখা যাচ্ছে।

চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী। শুরুতে কিছুটা ধীর গতিতে শুরু হলেও, একের পর এক ঝড়ো ইনিংসের সাহায্যে তারা শক্তিশালী স্কোর গড়ে। সাব্বির হোসেন ১৯ বলে ৩৯ রান করেন, যেখানে ছিল চারটি চার এবং তিনটি ছক্কার মার। এরপর হারিস রউফ ১৯ রানে আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে দলকে ভালো শুরু এনে দেন।

রাজশাহীর পরবর্তী সেরা ইনিংসটি খেলেন ইয়াসির আলী রাব্বি। মাত্র ৩২ বলে ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংসে দলকে আরও বড় স্কোরের দিকে নিয়ে যান তিনি। রাব্বি চারটি চার ও ছয়টি ছক্কা হাঁকিয়ে রংপুর বোলারদের নাস্তানাবুদ করে দেন। যদিও রাজশাহীর লোয়ার অর্ডার ব্যর্থ হলে, তারা ১৭০ রানে অলআউট হয়ে যায়। তবে তাদের পারফরম্যান্সে দলের আত্মবিশ্বাস ছিল স্পষ্ট, কারণ এটা ছিল বিপিএল চলতি আসরের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং স্কোর।

রংপুরের কাছে ১৭১ রানের লক্ষ্য ছিল কোনো সহজ কাজ নয়, তবুও তাদের ব্যাটিং অর্ডার একসময় ছিল দুর্দান্ত। তবে রাজশাহীর বোলিং আক্রমণ সামনে আসতেই রংপুরের ব্যাটাররা আকাশে উড়ে গেল। তিনে নামা সাইফ হাসান ২৯ বলে ৪৩ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন, কিন্তু দলের অন্য ব্যাটাররা ব্যর্থ হন। অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানও ২৬ বলে ৪১ রান করলেও দলের বাকি ব্যাটারদের অবদান ছিল অনুপস্থিত।

রংপুরের ১৪৬ রানে অলআউট হওয়ার পেছনে মূল ভূমিকা রাখেন রাজশাহীর বোলাররা। বিশেষভাবে জিম্বাবুয়ের স্পিন অলরাউন্ডার রায়ান বার্ল। তিনি ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে রংপুরের ব্যাটিং লাইন-আপে ধস নামিয়ে দেন। তাসকিন আহমেদ ৩.২ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন এবং এসএম মেহরাব ৩ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন।

এই জয়ে রাজশাহী ১০ ম্যাচে ৪টি জয় নিয়ে প্লে-অফে যাওয়ার দৌঁড়ে থাকতে পারে, যেখানে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে তাদের পারফরম্যান্সের উপর নির্ভর করবে। তবে তারা জানে, খেলাধুলার এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশে প্রতিটি ম্যাচের গুরুত্ব অপরিসীম।

অন্যদিকে, রংপুর রাইডার্সের জন্য এটাই সতর্কবার্তা, যেহেতু তাদের ব্যাটিংয়ের মধ্যেও কিছু দুর্বলতা ধরা পড়েছে। যদিও তারা সুপার ফোর নিশ্চিত করেছে, তবে প্লে-অফের আগেই নিজেদের ফর্মে ফিরতে হবে। দলের বোলিং বিভাগকে আরও ধারালো করা এবং ব্যাটিং লাইনআপে মজবুততা আনতে হবে তাদের।

ম্যাচের সেরা পারফরম্যান্স:

ইয়াসির আলী রাব্বি – ৩২ বলে ৬০ রান, ৬টি ছক্কা, ২টি চারের সঙ্গে দুর্দান্ত ইনিংস।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন