কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে


পাকিস্তানের কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা দ্রুত বাড়ছে। ২৬ জন নিরীহ পর্যটক নিহত হওয়ার ঘটনায় দুই দেশের সম্পর্ক আরও অবনতি হয়েছে। এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) পরপর দুই রাত ধরে গুলি বিনিময়ের খবর পাওয়া গেছে, যা দুই দেশের মধ্যে নতুন করে যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, শুক্রবার দিবাগত রাতে পাকিস্তানি সেনাচৌকি থেকে উসকানিমূলকভাবে গুলি ছোড়া হয়। জবাবে ভারতীয় বাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতেও একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল। যদিও পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি, তবুও সীমান্তে এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও সংকটাপন্ন করে তুলেছে।

কাশ্মীর পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, পেহেলগামের হামলায় অংশ নেয় তিনজন সশস্ত্র সদস্য, যাদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তবুও ভারত অভিযোগ করছে, হামলার পেছনে পাকিস্তানের মদদ রয়েছে, যা নতুন করে আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

পেহেলগাম হামলার পর দুই দেশই পাল্টাপাল্টি কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পাকিস্তান তার আকাশসীমা ভারতীয় উড়োজাহাজের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে। পাল্টা জবাবে ভারত সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে, যা দুই দেশের দীর্ঘদিনের চুক্তিভিত্তিক সম্পর্কেও বড় ধাক্কা দিয়েছে।

কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে অতীতেও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তিনটি বড় যুদ্ধ হয়েছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্তে যুদ্ধবিরতির চুক্তি কার্যকর ছিল, তবুও মাঝেমধ্যে গুলি বিনিময়ের ঘটনা নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দেয়। এবারের ঘটনাগুলো বিশেষজ্ঞদের মনে আশঙ্কা তৈরি করেছে, দুই দেশ আবারও সরাসরি সংঘাতের পথে হাঁটছে কিনা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কাশ্মীরের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং সীমান্ত উত্তেজনা যদি দ্রুত কূটনৈতিক উপায়ে সামাল না দেওয়া যায়, তবে ভারত পাকিস্তানের যুদ্ধের সম্ভাবনা আরও জোরালো হতে পারে। আর সেটি শুধু উপমহাদেশেই নয়, পুরো বিশ্বের জন্যই বড় ধরনের উদ্বেগের কারণ হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন