কুয়েটে ভিসির অপসারণে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শিক্ষার্থীদের


খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এ আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। দীর্ঘদিন ধরে চলা দাবি আদায়ের সংগ্রাম এবার পৌঁছেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ চেয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন। রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটায় কুয়েট ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার চত্বরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হলে আগামী সোমবার দুপুর ৩টা থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করবেন।


প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈকত এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আইইএম) বিভাগের শিক্ষার্থী উপল। তারা বলেন, ঈদের পরে শিক্ষার্থীরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের জন্য প্রস্তুত ছিল। প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছিল, দ্রুত হল খুলে দেওয়ার জন্য, যেন শিক্ষার্থীরা ফিরে এসে যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। তারা জানান, পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়ন হলে বা তার নিশ্চয়তা পাওয়া গেলে, উপাচার্যের পদত্যাগ চাওয়া থেকে সরে আসার বিষয়েও আপত্তি ছিল না।

তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসন উল্টো পথে হেঁটেছে। ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া, শিক্ষার্থীদের নামে দুর্বল মামলা দিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন, পানি ও ওয়াইফাই বন্ধ করে হল থেকে বের করে দেওয়া, গ্রাফিতি মুছে দেওয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা—এসবই প্রশাসনের দমনমূলক আচরণের প্রমাণ। এমনকি ঈদের ছুটির পরেও হল না খুলে তাদের দুই দিন খোলা আকাশের নিচে রাস্তায় রাত কাটাতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, সন্ত্রাসীদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের ওপর একের পর এক তদন্ত কমিটি চাপিয়ে দিয়ে ৩০ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও আন্দোলন থেকে সরে না এলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এতসব পরিস্থিতির পরও প্রশাসন অন্তত একবারও আন্তরিকভাবে আলোচনায় বসেনি বলেই শিক্ষার্থীদের দাবি।

সবশেষে শিক্ষার্থীরা বলেন, “আমরা ক্লান্ত, হতাশ ও দিশেহারা। আমাদের আর কিছু করার নেই। একমাত্র পথ—আমরণ অনশন।” তাদের মতে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সংকট নিরসনের জন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে এর ফলাফল হবে ভয়াবহ। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য এবং সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন