ক্যান্টনমেন্টে গোপন বৈঠক: আসন সমঝোতার বিনিময়ে আ.লীগ পুনর্বাসনের প্রস্তাব! – হাসনাতের দাবি


ভারতের প্রত্যক্ষ মদদে 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ' নামে একটি নতুন রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার দাবি, ১১ মার্চ দুপুর ২:৩০ মিনিটে ক্যান্টনমেন্টে তাকে এবং আরও দুইজনকে ডেকে এনে আসন সমঝোতার বিনিময়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন, বৈঠকে জানানো হয়, ভারতের প্রত্যক্ষ পরিকল্পনায় সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ তৈরি করা হবে। এই দল আগামী এপ্রিল-মে মাসের মধ্যে শেখ হাসিনাকে প্রত্যাখ্যান করবে, শেখ পরিবারের নানা অপরাধ স্বীকার করবে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আওয়ামী লীগ গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণের সামনে হাজির হবে।

তিনি আরও দাবি করেন, এই পরিকল্পনার আওতায় ইতোমধ্যে দেশের একাধিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে, এবং কিছু দল শর্তসাপেক্ষে এই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় রাজি হয়েছে। তাদের যুক্তি, একটি বিরোধী দলের পরিবর্তে একাধিক দুর্বল বিরোধী দল থাকাই ভালো।

হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার সঙ্গীরা বৈঠকে এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং জানান, আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া উচিত, পুনর্বাসন নয়। এই বক্তব্যের পর ক্যান্টনমেন্টের পক্ষ থেকে তাদের হুঁশিয়ার করে বলা হয়— "আওয়ামী লীগকে ফিরতে কোনো বাধা দিলে দেশে যে সংকট তৈরি হবে, তার দায়ভার আপনাদের নিতে হবে। আওয়ামী লীগ মাস্ট কাম ব্যাক!"

উত্তরে হাসনাত আবদুল্লাহ পাল্টা প্রশ্ন করেন, “যে দল এখনো ক্ষমা চায়নি, অপরাধ স্বীকার করেনি, তাকে কীভাবে ক্ষমা করে দেওয়া যায়?” তখন ক্যান্টনমেন্টের প্রতিনিধি রেগে গিয়ে বলেন— "তোমরা কিছুই বোঝো না। আমাদের ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। আওয়ামী লীগ ছাড়া ‘ইনক্লুসিভ’ নির্বাচন সম্ভব নয়।”

এসময় হাসনাত আবদুল্লাহ ও তার সঙ্গীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন— "আওয়ামী লীগের সাথে কোনো আপস হতে পারে না। আওয়ামী লীগকে ফিরতে হলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে ফিরতে হবে।"

এরপর বৈঠক অসমাপ্ত রেখেই তারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “এই পোস্ট দেওয়ার পর আমার কী হবে জানি না। নানা চাপ বা বিপদের মুখোমুখি হতে পারি। কিন্তু আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে কোনো আপোষের সুযোগ নেই।”

তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগ যদি রাজনীতি করতে পারে, তবে জুলাই আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যাবে। আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকা পর্যন্ত আমরা শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। ৫ আগস্টের পরের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কামব্যাকের আর কোনো সুযোগ নেই। বরং আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নিষিদ্ধ হতে হবে।”

নবীনতর পূর্বতন