রমজানে দুর্বলতা দূর করতে রাসুল (সাঃ)-এর পছন্দের খাবার


রমজান মাসে সারাদিন রোজা রাখার কারণে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে, যা ক্লান্তি ও দুর্বলতার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে গ্রীষ্মের সময় দীর্ঘসময় না খেয়ে থাকার ফলে শক্তি কমে যায় এবং শরীর নিস্তেজ অনুভব করে। এই সমস্যা দূর করতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন কিছু খাবার খেতেন, যা দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধারে সাহায্য করত এবং শরীরকে সুস্থ রাখত। তার পছন্দের তিনটি বিশেষ খাবার হলো শসা, খেজুর ও দই। আধুনিক পুষ্টিবিদরাও মনে করেন, এই তিনটি খাবার একসঙ্গে খেলে শরীর দ্রুত শক্তি ফিরে পায় এবং হজমশক্তি উন্নত হয়।

শসার উপকারিতা

শসা হলো এক ধরনের পানিসমৃদ্ধ সবজি, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। এতে প্রায় ৯৫% পানি থাকে, যা দীর্ঘসময় রোজা রাখার পর পানির ঘাটতি পূরণ করতে কার্যকর। এছাড়াও শসায় রয়েছে:

  • ভিটামিন A, B, C ও K, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • পটাশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজ, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়ক।

খেজুরের উপকারিতা

রাসুল (সাঃ) ইফতার শুরু করতেন খেজুর দিয়ে, যা শরীরকে তাৎক্ষণিক শক্তি দিতে সাহায্য করে। খেজুর প্রাকৃতিক চিনি সমৃদ্ধ একটি খাবার, যা দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করে এবং ক্লান্তি দূর করে। এতে রয়েছে:

  • ডেক্সট্রোজ ও ফ্রুক্টোজ, যা তাৎক্ষণিক শক্তি জোগায়।
  • ভিটামিন B-কমপ্লেক্স ও আয়রন, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে সহায়ক।
  • ফাইবার, যা হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

দইয়ের উপকারিতা

দই হলো একটি প্রোবায়োটিক খাবার, যা হজমশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি পাকস্থলীর জন্য উপকারী এবং গ্যাস ও অম্বল দূর করতে সহায়ক। দইয়ে রয়েছে:

  • ভালো ব্যাকটেরিয়া, যা হজমব্যবস্থা উন্নত করে।
  • প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম, যা হাড় ও মাংসপেশি মজবুত করে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বক ও চুলের জন্য উপকারী।

রাসুল (সাঃ)-এর সুন্নত ও আধুনিক পুষ্টিবিদদের মতামত

রাসুল (সাঃ) শসা ও খেজুর একসঙ্গে খেতেন, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আধুনিক পুষ্টিবিজ্ঞানীরা মনে করেন, যদি দইও এই তালিকায় যোগ করা হয়, তবে এটি আরও বেশি কার্যকর হয়। কারণ শসা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে, খেজুর শক্তি যোগায় এবং দই হজমশক্তি উন্নত করে।

কীভাবে এই তিনটি খাবার খাবেন?

রমজানে ইফতারে বা সেহরিতে এই তিনটি খাবার একসঙ্গে খেতে চাইলে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন:
• এক ভাগ খেজুর
• দুই ভাগ শসা
• সমপরিমাণ দই

এই উপাদানগুলো মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে, অথবা সালাদ বা স্মুদি হিসেবে তৈরি করা যায়।

উপকারিতা :

  • দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধার হয়।
  • শরীর হাইড্রেটেড থাকে।
  • হজমশক্তি উন্নত হয়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
  • শরীর দীর্ঘসময় সতেজ ও কর্মক্ষম থাকে।

রাসুল (সাঃ)-এর খাদ্যাভ্যাস কেবল ধর্মীয় কারণেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং স্বাস্থ্যগত দিক থেকেও এটি অত্যন্ত উপকারী। রমজানে শসা, খেজুর ও দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে শরীর সুস্থ থাকবে এবং রোজা রাখা সহজ হবে।

নবীনতর পূর্বতন