ফাইনালের প্রথম বল থেকেই উত্তেজনা চরমে ওঠে, চিটাগং কিংসের ওপেনিং জুটির বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে। খাজা নাফে ও পারভেজ হোসেন ইমনের দারুণ আক্রমণে পাওয়ারপ্লে থেকেই ৫৭ রান তুলে ফেলেন তারা। উড়ন্ত সূচনা দিয়ে ১০০ রানের মাইলফলক স্পর্শ করার পর চিটাগং ১২১ রান সংগ্রহ করে প্রথম উইকেট হারায়। এরপরও তাদের স্কোর বড় হতে থাকে, চিটাগং ২০০ রানের কাছাকাছি চলে যায়। তবে বরিশালের বোলাররা হার মানেননি। মোহাম্মদ আলি এবং এবাদত হোসেন কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে ১টি করে উইকেট নেন।
বরিশাল যখন ব্যাট করতে নামে, তখন শুরু থেকেই তামিম ইকবালের ব্যাট থেকে ঝলকানি দেখা যায়। ২৯ বলে ৫৪ রান করে তিনি দলকে শক্ত ভিত্তি দেন। তবে দ্রুত কিছু উইকেট পড়ে যাওয়ায় চাপ বাড়তে থাকে। ডেভিড মালান ও তাওহিদ হৃদয়ের বিদায়ের পর ম্যাচে টানাপোড়েন শুরু হয়। কিন্তু মুশফিকুর রহিম এবং কাইল মেয়ার্সের অবিশ্বাস্য ব্যাটিং এক নতুন রোমাঞ্চ সৃষ্টি করে।
বিশেষ করে কাইল মেয়ার্স, তার ২৮ বলে ৪৬ রানের ইনিংসে পুরো ম্যাচের রঙ বদলে দেন। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা আসে রিশাদ হোসেনের হাতে। শেষ ২ ওভারে ২০ রান দরকার ছিল বরিশালের, তখন রিশাদের ভয়ঙ্কর ক্যামিও শুরু হয়। প্রথম ৩ বলে আসে ৩ রান, ফলে ৯ বলে দরকার ১৭ রান। এরপর রিশাদ এক বলেই ছক্কা হাঁকান এবং পরবর্তী বলে ৩ রান নেন। এতে ৭ বলে ৮ রান দরকার হয়ে পড়ে।
এই অবস্থায় ক্রিজে ছিলেন মোহাম্মদ নবী, কিন্তু নবী মাত্র ৫ বল খেলেই ৩ রান করে আউট হন। নবীর বিদায়ের পর শেষ ওভারে ৮ রান প্রয়োজন ছিল। স্ট্রাইকে রিশাদ হোসেন। তখন বোলিংয়ে আসেন হুসাইন তালাত। প্রথম বলেই রিশাদ ঝলক দেখিয়ে ছক্কা হাঁকান। পরবর্তী বলেই ১ রান নেন। এরপর তানভীর স্ট্রাইকে গিয়ে এক বল ডট দেন। তবে পরের বলটি ওয়াইড হয়ে যাওয়ায় বরিশাল ২ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে। উল্লাসে মেতে ওঠে তামিমের লাল বাহিনী।
চিটাগং কিংসের শরিফুল ইসলাম ৪ উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করলেও শেষ পর্যন্ত রিশাদের এক ঝলকেই চূড়ান্ত জয় আসে। এই নাটকীয় জয় দিয়ে ফরচুন বরিশাল ইতিহাস রচনা করে, টানা দ্বিতীয়বার বিপিএল শিরোপা জিতে নেয়।
বিপিএল ২০২৫ এর এই ফাইনাল সবার মনে থাকবে, রিশাদ হোসেনের ক্যামিও, তামিমের নেতৃত্ব আর মেয়ার্সের ব্যাটিং ঝড়ে ফরচুন বরিশাল দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পায়।
উবেদুল্লাহ তালুকদার /সবুজ প্রান্ত ডট কম