গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জকিগঞ্জ-সিলেট সড়কের কলাকুটা দারুল আযকার মাদ্রাসার পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বাড়ির পাশে লাকড়ি আনতে গিয়ে রাস্তার ধারে ঠেলাগাড়িতে লাকড়ি তুলছিলেন নাসির। এ সময় একটি মোটরসাইকেল এসে তাকে ধাক্কা দেয়। এতে নাসিরসহ মোটরসাইকেলের দুই আরোহী গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা নাসিরকে উদ্ধার করে প্রথমে কালিগঞ্জ বাজারের একটি ফার্মেসিতে নিয়ে যান। পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে নাসির মারা যান।
নাসির ছিলেন পরিবারের অন্যতম ভরসা। ঘটনার দিন অসুস্থ মাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে তিনি মাকে বলেছিলেন, "আম্মা, তুমি বোরকা ফিন্দ, আমি লাকড়ি এক টিফ লইয়া আইয়া তোমারে ডাক্তার লইয়া যাইমু"-কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি আর পূরণ হলো না।
নাসিরের মৃত্যুতে পুরো গ্রাম শোকে স্তব্ধ। তার জানাজায় মানুষের ঢল নামে। স্থানীয়রা তাকে একজন সৎ, দায়িত্বশীল এবং পরিবারের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তার এভাবে চলে যাওয়া পরিবারের পাশাপাশি পুরো এলাকার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
নাসিরের পরিবার এখন শোকে ভেঙে পড়েছে। পাঁচ মাস বয়সী এক শিশু এবং দুই বছরের এক মেয়ে বাবাকে হারিয়ে অসহায়। তার মা সন্তানের শোকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও এই শোক মেনে নিতে পারছেন না।
দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সোনাসার গ্রামের আব্দুর রহিমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নাসিরের এই অকাল মৃত্যু আবারও সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টি সামনে এনেছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন, "আর কত মায়ের বুক খালি হলে, কত সন্তান বাবা হারা হলে সড়ক নিরাপদ হবে?"