বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: কুয়েতে একটি তাবুর ভেতরে জেনারেটরের ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে মর্মান্তিক মৃত্যুবরণ করেছেন দুই বাংলাদেশি। তারা হলেন সিলেটের বিশ্বনাথ পৌরসভার নরশিংপুর গ্রামের মৃত হাজী মনা উল্লাহর ছেলে কয়েছ মিয়া (৪৪) ও তার শ্যালক উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের শাখারীকোনা গ্রামের আব্দুল গৌছের ছেলে রাসেল আহমদ (২৯)। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে দু’জনের লাশ বাড়িতে এসে পৌঁছলে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। দুই পরিবারেই চলে শোকের মাতম। ভারী হয়ে উঠে আশপাশের পরিবেশ।
উভয়ের পারিবারিক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন দুই সন্তানের জনক কয়েছ মিয়া। কিছুদিন পূর্বে দেশে ফিরে পাড়ি জমান কুয়েতে। সেখানকার এক মরুভূমি এলাকায় বসবাস করতেন তিনি। থাকতেন একটি তাবুতে। গত মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে চার বছর ধরে কুয়েতে থাকা তাঁর শ্যালক, এক কন্যা সন্তানের জনক রাসেল আহমদ তাকে দেখতে যান এবং রাতে সেখানেই থেকে যান। অতি ঠান্ডার কারণে রাতে তারা তাবুর ভেতরে জেনারেটরের মাধ্যমে হিটার চালিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে তারা ঘুম থেকে না উঠায় পার্শ্ববর্তী লোকজন ডেকেও কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় দু’জনকে ওই অবস্থায়ই স্থানীয় আল সাবা হাসপাতালে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক দু’জনকেই মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালের রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, জেনারেটরের ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়েই মারা গেছেন কয়েছ ও তাঁর শ্যালক রাসেল।
এদিকে, রবিবার সকালে কয়েছ মিয়া ও রাসেল আহমদের লাশ তাদের বাড়িতে এসে পৌঁছলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনেরা। দু’জনের বাড়িতেই চলে শোকের মাতম। তাদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে আশপাশের পরিবেশ। এর মধ্যে দুপুর পৌনে ১২টায় কয়েছ মিয়ার জানাজা তাঁর নিজ গ্রাম নরশিংপুরের উত্তরের মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এবং রাসেল আহমদের জানাজা দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে তাঁর নিজ গ্রাম শাখারীকোনা পুরাতন জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে দু’জনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়