নিজস্ব প্রতিবেদক :: ঢাকায় দাফনের ৩ বছর পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ রবিবার বাদ আসর নিজের বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করা শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানায় কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা নাসরিনের তত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পুণঃদাফন করা হল। দাফনের আগে সাতবাক ঈদগাহ ময়দানে উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ সামনে রেখে গার্ড অব অনার জানান একদল পুলিশ সদস্য। উপস্থিত ছিলেন হারিছ চৌধুরী কন্যা ব্যারিষ্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী ও পরিবারের সদস্যরা। ঈদগাহ মাঠে হাজার হাজার উৎসুক জনতা ও জকিগঞ্জ কানাইঘাটের অসংখ্য বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে কানাইঘাট উপজেলার সড়কের বাজারস্থ সাতবাক ঈদগাহে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ (চাকসু মামুন), সিলেট মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক ভিপি মাহবুবুল হক চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সেলিম সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা হারিছ চৌধুরীর বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করেন। উপস্থিত ছিলেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তাপাদার, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শরীফ লস্কর, বিএনপি নেতা এ্যাডভোকেট মোস্তাক আহমদ প্রমুখ।
জানা যায়, শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটা দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে হরিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন মেয়ে ও স্বজনরা। রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তারা সিলেট সার্কিট হাউসে এসে পৌছেন। পরে সেখানে প্রশাসন এবং সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে দেহাবশেষে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২০ ডিসেম্বর হারিছ চৌধুরীর লাশ পুনরায় দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তার মেয়ে সামিরা তানজিন চৌধুরী ও আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিনের তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী মারা যাওয়ার পর হারিছ চৌধুরী পরিচয় গোপন করে মরদেহ দাফন করা হয়। অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান নামে হারিছ চৌধুরীকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যিন মাদরাসা প্রাঙ্গণে দাফন করা হয়। পরে তাঁর মেয়ে সামিরার উচ্চ আদালতে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে মরদেহ উত্তোলন করে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ডিএনএ পরীক্ষায় হারিছ চৌধুরী নিশ্চিত হওয়ার পর সরকারের নির্দেশনায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশনার আলোকে আজ সড়কের বাজার শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানায় হারিছ চৌধুরীর দেহাবশেষ দাফন করা হয়।