জমিয়ত ত্যাগ করে খেলাফতে যোগদান, আলোচনার কেন্দ্রে সাবেক এমপি শাহীনূর পাশা


জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে বাদ পড়া সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শাহীনূর পাশা চৌধুরী নতুন করে আলোচনায় এসেছেন। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ঘাত-প্রতিঘাতের পর তিনি যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে। তাঁর এই নতুন পদক্ষেপ সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

দীর্ঘদিন জমিয়তের নেতৃত্বে থাকা শাহীনূর পাশা ২০২৪ সালের বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামানত হারান। দল থেকে বাদ পড়ার পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে নানা সমালোচনার মুখে পড়েন। এরপর বেশ কয়েক মাস তিনি নিষ্ক্রিয় থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুনরায় সক্রিয় হন এবং জমিয়তে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে দল তাঁকে গ্রহণ করেনি।

অবশেষে তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে যোগ দেন। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার মোহাম্মদপুরে দলীয় কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দলে যোগ দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহমুদুল হক, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর রেজাউল করিম জালালীসহ অন্যান্য নেতারা।

যোগদানের আগে শাহীনূর পাশা ফেসবুকে লিখেন, “ক্ষমা করে দিও আন্তরিক সাথীরা।” তাঁর এই পদক্ষেপের খবর জানার পর থেকেই নির্বাচনী এলাকা জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।

কবি ও লেখক আবু আসাদ চৌধুরী এ বিষয়ে বলেন, “রাজনীতিতে কখনও শেষ কথা বলা যায় না। শাহীনূর পাশা জগন্নাথপুর ও শান্তিগঞ্জে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছিলেন। জমিয়ত তাঁর সঙ্গে যে আচরণ করেছে, তা দুঃখজনক। তাঁর নতুন পথচলা শুভ হোক।”

তবে জমিয়তের তৃণমূলের অনেক নেতা তাঁর এই সিদ্ধান্তকে নেতিবাচকভাবে দেখছেন। কেউ কেউ এটিকে ‘পট্টিবাজি’ বলে অভিহিত করেছেন। অন্যদিকে, স্থানীয় সমর্থকদের একাংশ তাঁর পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

শাহীনূর পাশা চৌধুরী ১৯৯১ সালে ছাত্র জমিয়তের নেতৃত্বের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। ২০০৫ সালে তিনি উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি বিভিন্ন সময়ে আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন।

খেলাফত মজলিসে যোগদানের মধ্য দিয়ে তিনি নতুন রাজনৈতিক অধ্যায় শুরু করলেন। এখন দেখার বিষয়, তাঁর এই পদক্ষেপ সুনামগঞ্জ-৩ আসনের রাজনীতিতে কী প্রভাব ফেলে এবং নতুন দলে তাঁর ভূমিকা কেমন হয়।

উবেদুল্লাহ তালুকদার : সবুজ প্রান্ত ডটকম


নবীনতর পূর্বতন