"ডোনেৎস্কে রুশ লক্ষ্যবস্তুতে গোলাবর্ষণ করছে ইউক্রেনীয় সেনারা, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।" |
বিশ্ব রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনার পারদ আরও চড়ছে। ইউক্রেনের সাবেক সামরিক কমান্ডার ভ্যালারি জালুঝনি সম্প্রতি দাবি করেছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। রাশিয়ার মিত্র দেশগুলোর সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়া এবং বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণ এই সংঘাতকে বৈশ্বিক যুদ্ধের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
ইউক্রেনস্কা প্রাভদার ইউপি ১০০ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় ভ্যালারি জালুঝনি বলেন, ২০২৪ সালে এসে আমাদের প্রতীয়মান হচ্ছে, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তিনি রাশিয়ার মিত্রদের সরাসরি সম্পৃক্ততাকে এই যুদ্ধের অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
তিনি দাবি করেন, উত্তর কোরিয়ার সেনারা রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে সরাসরি ইউক্রেন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করছে। পাশাপাশি ইরানের শাহেদী ড্রোনের ব্যবহার বেসামরিক মানুষ হত্যা করছে। চীনা অস্ত্রের সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
ভ্যালারি জালুঝনি বলেন, ‘ইউক্রেনের ভূখণ্ডে যুদ্ধ বন্ধ করা সম্ভব, তবে আমাদের মিত্ররা তা বুঝতে চায় না। এর প্রতিক্রিয়া বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে।’ তিনি মিত্র দেশগুলোকে দ্রুত সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সাম্প্রতিক ভাষণে যুদ্ধের বৈশ্বিক পরিণতির ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আগ্রাসী কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়, আমরা সমানভাবে প্রতিক্রিয়া জানাব। পশ্চিমা দেশগুলো যদি তাদের অস্ত্র আমাদের সামরিক স্থাপনায় ব্যবহারের অনুমতি দেয়, তবে আমরা তাদের সামরিক স্থাপনায় আঘাত করার অধিকার রাখি।’
পুতিনের এই বক্তব্য বিশ্বে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্রের ব্যবহার এবং রাশিয়ার পাল্টা হামলা বিশ্বকে আরও সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইউক্রেন যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার প্রায় ১০ হাজার সেনা রাশিয়ার পক্ষে অংশগ্রহণ করছে। এছাড়া ইরানি ড্রোন ব্যবহারও ক্রমশ বেড়ে চলেছে ।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সংঘাত বৈশ্বিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করছে। যুদ্ধে উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং চীনের মতো দেশগুলোর সম্পৃক্ততা এই সংঘাতকে বৈশ্বিক যুদ্ধের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাকে আরও ঘনীভূত করছে। ইউক্রেনের সাবেক সামরিক কমান্ডারের দাবি এবং রুশ প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি বিশ্ব নেতাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা। এই যুদ্ধ বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। শান্তি প্রতিষ্ঠায় বিশ্বনেতাদের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।