সিলেট বিভাগের মানুষের জন্য বন্যা একটি নিত্যসঙ্গী সমস্যা। বর্ষা মৌসুমে দফায় দফায় বন্যার কবলে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি এবং সম্পদ। বন্যার ভয়াবহতা সবচেয়ে বেশি দেখা গিয়েছিল ২০২২ সালে, যখন তিন দফা বন্যা মানুষকে বিপর্যস্ত করেছিল। চলতি বছরও সিলেটবাসী একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন।
বন্যার প্রধান কারণ হিসেবে অনেকেই কিশোরগঞ্জের ইটনা-মিঠামইন-অষ্ট্রগ্রাম সড়ককে দায়ী করছেন। এ সড়কটি হাওরের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে সিলেটবাসীর জন্য আশার কথা জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সিলেটে আয়োজিত ‘‘হাওরে মৎস্যসম্পদ রক্ষায় স্টেকহোল্ডার্স কনসাল্টেশন ওয়ার্কশপ’’-এ ফরিদা আখতার বলেন, "সিলেটকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে ইটনা-মিঠামইন-অষ্ট্রগ্রাম সড়কের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হবে।"
তিনি আরও জানান, সড়কটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ফরিদা আখতার হাওর ভরাট ও অপরিকল্পিত বাধ এবং রাস্তা নির্মাণকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, "নির্বিচারে হাওর ভরাট হওয়ায় পানিপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে এবং এতে হাওর ও মৎস্যসম্পদ মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।"
সিলেট মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে খ্যান প্যালেস কনভেনশন হলে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় দেশের হাওর অধ্যুষিত সাতটি জেলার মৎস্যচাষ সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
তাঁরা উল্লেখ করেন:
• হাওরের পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রয়োজন।
• মৎস্যসম্পদ রক্ষায় অবৈধ বাঁধ অপসারণ ও সচেতনতা কার্যক্রম চালানোর গুরুত্ব।
• অপরিকল্পিত রাস্তা নির্মাণ বন্ধ করা।
কর্মশালায় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সাতটি জেলার মৎস্য সম্পদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।