জকিগঞ্জে জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে মতবিনিময়

জকিগঞ্জে জাতীয় তামাক মুক্ত দিবস উপলক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার দুপুর ১২ টার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা ধুমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রন টাক্সফোর্স কমিটি এবং এসডিএসের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম আব্দুল আহাদ। মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ তাপাদার।

এসডিএসের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল হামিদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া সভায় আলোচনায় অংশ নেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহীদুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাংবাদিক জুবায়ের আহমদ ও উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর সৈয়দ জহিরুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশে ৯ অক্টোবর জাতীয় তামাকমুক্ত দিবস পালন করা হয়। ২০১১ সাল থেকে তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বেসরকারী সংগঠনগুলো এই দিনটিকে পালন করে আসছে।

মতবিনিময় সভায় বক্তারা তামাকজাত পণ্যের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে সরকারের কাছে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন পাশাপাশি জকিগঞ্জে প্রকাশ্যে পাবলিক প্লেসে ধুমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে প্রশাসনের নিকট ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনার দাবী জানান।

বক্তারা বলেন, যত্রতত্র তামাক কোম্পানিগুলোর নজরকাড়া বিজ্ঞাপন প্রচার এবং বাজারে খুচরা তামাকজাত পণ্য বিক্রয়ের ফলে তামাকের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে তরুণ সমাজ। সিগারেট, বিড়ি, গুল, জর্দ্দার মতো ক্ষতিকর দ্রব্য নিয়ে সকলের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী। প্রকৃত পক্ষে বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা ও ধোঁয়া বিহীন তামাকপণ্য খোলা অবস্থায় বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হলে কিশোর, তরুণ, নারী ও স্বল্প আয়ের মানুষের মধ্যে এসব পণ্যেও সহজলভ্যতা ও ব্যবহার হ্রাস পাবে। ২০ শলাকার পুরো সিগারেটের প্যাকেট একবারে কিনতে হলে অনেকেই এই পরিমাণ অর্থ ব্যয়ে নিরুৎসাহিত হবে এবং ধূমপান বন্ধ করতে বাধ্য হবেন। বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রয়ের ফলে সিগারেটের মোড়কে উল্লিখিত স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা গুলো ব্যবহারকারীর দৃষ্টি গোচর হয়না। এছাড়া, খুচরা সিগারেট বিক্রয়ের ফলে ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত মূল্য আদায় করা হয়। এটি নিষিদ্ধ হলে এই অতিরিক্ত মূল্য থেকে সরকারের অতিরিক্ত ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে।

বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য খুচরা তামাকজাত পণ্য বিক্রি বন্ধ করা জরুরি। এর ফলে শিশুদের দ্বারা ভ্রাম্যমান তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হ্রাস পাবে এবং তরুণদের মধ্যে নতুন করে তামাকের প্রতি আসক্তি জন্মাবেনা।

এক জরিপে দেখা যায়, বাংলাদেশে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করে। দেশে তামাকজনিত রোগে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

তামাক কোম্পানি বছরে ৮৪ মিলিয়ন টন কার্বন-ডাই-অক্সাইড নি‍র্গমণ, ৬ ট্রিলিয়ন সংখ্যক সিগারেট শলাকা উৎপাদনের জন্য ২২ বিলিয়ন টন পরিমাণ পানি অপচয় করে। এছাড়াও ৬০ কোটি বৃক্ষ নিধনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক সম্পদ বিনষ্ট ও ইকোসিস্টেমে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করছে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন