বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ আলীর বিরুদ্ধে ভূয়া রেজুলেশন তৈরি করে ইউএনডিপির বরাদ্দকৃত নলকুপের জন্য জনস্বাস্থ্য অফিসে জমা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে খাজাঞ্চি ইউনিয়ন পরিষদের ১০জন সদস্য স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লিখিত অভিযোগে ইউপি সদস্যরা উল্লেখ করেছেন, গত ২ অক্টোবর তারিখে ইউনিয়ন পরিষদে ইউএনডিপির ১৫টি টিউবওয়েল বরাদ্দ এসেছে। এ বিষয়ে আমাদের পরিষদের কোনো সদস্যবৃন্দের জানা নেই। এব্যাপারে পরিষদের সদস্য, সদস্যার সাথে কোনো ধরনের আলাপ-আলোচনা করা হয়নি। কিন্তু ভূয়া রেজুলেশন তৈরি করে উপজেলা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। আমরা পরিষদের সকল সদস্যবৃন্দ তদন্ত করে জানতে পারি যে আমাদের না জানিয়ে ভূয়া রেজুলেশন করে উপজেলায় প্রেরণ করেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দাবি জানান পরিষদের সদস্য, সদস্যরা।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ দায়েরের ব্যাপারে খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান আরশ আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়।
বিশ্বনাথ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা রাসেল ভূইয়া জানান, খাজাঞ্চি ইউপি চেয়ারম্যান রেজুলেশনসহ ১৫ জনের একটি তালিকা জমা দিয়েছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত সকল নলকূপের কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইউপি সদস্যদের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনন্দা রায় বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে এই ইউনিয়নের বৃরাদ্দকৃত নলকূপের সকল কার্যক্রম বর্তমানে বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরেকটি অভিযোগ দিয়েছেন খাজাঞ্চি ইউনিয়নের জায়নগর (নোয়াপাড়া) গ্রামের শুকুর আলীর পুত্র কবির হোসেন।
তিনি গত ৯ অক্টোবর বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে এই অভিযোগটি দায়ের করেন। ইউএনও অফিসে ১৪ অক্টোবর মঙ্গলবার অভিযোগটি গৃহীত হয়।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, টিউবওয়েল বরাদ্দের তালিকায় চেয়ারম্যান অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন। প্রকৃত অর্থে যারা পাওয়ার উপযুক্ত তাদের নাম না দিয়ে তিনি তার দলের ও নিকটস্থ আত্মীয় স্বজন এমনকি নাম পরিচয় বিহীন লোকের নামে তালিকা তৈরি করেছেন।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন খাজাঞ্চী ইউনিয়নে সুবিধাবঞ্চিতরা বিশুদ্ধ পানির সংকটে আছে। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সরকারি টিউবওয়েল বরাদ্ধের জন্য যে তালিকা দেয়া হয়েছে সেখানে বেশির ভাগই স্বচ্ছল ব্যক্তি, আওয়ামীলীগের দলীয় নেতাকর্মী, প্রবাসী, শিক্ষক এবং প্রভাবশালীদের আত্মীয়স্বজন রয়েছে এই তালিকায়।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ভোট চুরির মাধ্যমে নির্বাচিত আরশ আলী চেয়ারম্যান খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদ এর প্যাডে যে তালিকা প্রেরণ করেছেন তাতে তাঁর নেতাকর্মী, ঘনিষ্ঠ ও আত্মীয়স্বজনকে তালিকায় রেখেছেন। বঞ্চিত করেছেন গরীব আসহায় উপকারভোগীদের। তালিকার ১৯ নাম্বারে আগ্নপাড়া নামে খাজাজী ইউনিয়ন পরিষদের কোন গ্রাম নেই। তাই সুবিধাবঞ্চিতরা যাতে টিউবওয়েল পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, তার জন্য তদন্ত করা জরুরি।
কবির হোসেন সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত উপকারভোগীদের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আবেদন জানান।