দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বরকতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাহেনা বেগমের অপসারণ অন্যতায় বদলির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের বরকতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশবর্তী সড়কে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী জানান, রাহেনা বেগম ২০১৮ সালে বরকতনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদান করার পর থেকে আওয়ামীলীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নানান অনিয়ম -দূর্নীতিতে যুক্ত হয়ে পড়েন। নিজ দল ক্ষমতায় থাকায় স্কুল পরিচালনা কমিটির সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ, পরামর্শ ছাড়াই নিজ ইচ্ছেমতো স্কুলের আসবাবপত্র ক্রয় করা থেকে শুরু করে,বিভিন্ন জাতীয় উৎসব,প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নমূলক কাজ পরিচালনা করে আসছেন। অনেক সময় জাতীয় উৎসবগুলো পালন না করে,স্কুলের শিক্ষা সামগ্রী ক্রয় না করেও তিনি মৌখিকভাবে ব্যায় দেখিয়ে আসছেন। চলতি বছরের ৫ আগষ্টের পর দুই ধাপে ২ টি চেকের মাধ্যমে আসা স্লিপের ৭১ হাজার টাকা'র হিসেবসহ- বিগত তিনবছরের স্লিপের টাকার কোন হিসেব দিতে পারেননি দূর্নীতিবাজ এই শিক্ষিকা। স্কুলের ১ টি লেপ্টপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর থাকার পরও কোনদিন শিক্ষা কাজে তা ব্যবহার করা হয়নি। দীর্ঘদিন যাবত ২ টি শ্রেনীকক্ষে বিদ্যুৎতিক ফ্যান নেই, বাল্প নেই। তাও দায় সারাভাবে দেখেও না দেখে আসছেন কথিত এই প্রধান শিক্ষিকা।
চলতি বছরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধিনে স্কুলের আঙ্গিনায় ১২ লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে একটি ওয়াশব্লক নির্মান করা হয়। কিন্তু নবনির্মিত এই ওয়াশ ব্লকটি নির্মানের সময় স্কুল পরিচালনা কমিটির কাউকে না জানিয়ে শিক্ষিকা রাহেনা বেগম অর্থ আত্মসাতের পায়তারায় নিজ ব্যক্তিগতভাবে এর কাজের উদ্ভোধন করেন ও কাজ শেষ হওয়ার পরবর্তী ওয়াশব্লকটি বুঝে রাখেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওয়াঁশব্লক নির্মানে অনিয়ম দুর্নীতি হওয়ায় কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও অনিয়মিত স্কুলে আসা, সঠিক সময়ে স্কুলে না আসায় দিনদিন স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা কমে আসছে। এতে এলাকায় আর কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই দূর্নীতিবাজ এই প্রধান শিক্ষকের অপসারণ অন্যথায় বদলি করনের দাবি জানান এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাবেক ইউপি সদস্য আলতাফ হোসেন, স্কুলের এডহক কমিটির দাতা সদস্য আফজাল হোসেন, স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ফয়ছল আহাম্মদ, আজবর আলী, আখলুছ আলী, এমদাদুল হক, এরশাদ আলী, রহমত আলী, তাজুত আলী, আসকর আলী, কবির মিয়া, আনফর আলী, ফয়জুর রহমান, সমুজ আলী, শামিম আহমদ প্রমুখ।
অভিযোগের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে বরকত নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাহেনা বেগম জানান, সকল কাজ দৃশ্যমান, সম্পন্ন হওয়া কাজের ভাউচার রয়েছে। এ ছাড়া সবকিছু শিক্ষা অফিসকে অবহিত করে নিয়ম মোতাবেক করেছি। অনিয়ম, দুর্নীতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করার প্রশ্নই আসে না। প্রজেক্টর চালানোর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কোন শিক্ষক না থাকায় ব্যবহার হয়নি, আর ল্যাপটপ আমার বাড়িতে নিতে হয় প্রতিষ্ঠানের কাজের জন্য, ওয়াশব্লক আমি একা বুঝে রাখিনি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা অবগত আছেন।
অভিযোগে বিষয়ে জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন কুমার সানা জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই,অভিযোগ পেয়েছি,তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।