পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরাও জানে না কিভাবে পানি আটকাতে হয় : হুছামুদ্দীন চৌধুরী এমপি


সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য ও ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি বলেছেন, নদী ভাঙ্গন ও বন্যা নিয়ন্ত্রন এগুলো নিয়ে প্রথম থেকে আমি সংসদে কথা বলতেছি। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ড পরিদর্শনের পর পরিদর্শন করতেছে। তাদের কার্যক্রম বন্যা নিয়ন্ত্রণকল্পে যথোপযুক্ত নয়। এ বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রীর কাছে আমরা সিলেটের কয়েকজন সংসদ সদস্য প্রস্থাব দিয়েছিলাম, আশা রাখছি আগামী সাপ্তাহে এবিষয়ে বৈঠকে বসবো। ডিপার্টমেন্টকেও আমরা ডাকবো। যাদেরকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তারা নিজেরাও জানে না কিভাবে পানি আটকাতে হয়, পানি বন্ধ করার জন্য কি কাজ করতে হয়। জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর ডাইক গুলো সংস্কারের জন্য আমি নিজে একদিনে ৮ কোটি ৩০ লক্ষ টাকার বরাদ্ধ মঞ্জুর করিয়ে দিয়েছি । এখানে যে কাজ হচ্ছে তা ১ কোটি টাকার বেশি হবে না। এ গুলো হচ্ছে মাটি ভরাটের কাজ। এগুলো আমি এলাকাবাসীকে নিয়ে করতে পারতাম। আমি তো ভাবছি এই টাকা দিয়ে আমাদের কুশিয়ারা নদীর সবগুলো ডাইক মেরামত সম্পন্ন হবে। এখানে এত টাকা খরচের প্রয়োজন নেই। এ সময় তিনি এসব কাজের ঠিকাদারদের কাজ পছন্দ হয় নি বলেও উল্লেখ করেন। মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি মঙ্গলবার জকিগঞ্জের খলাছড়ায় বন্যা দুর্গতদের মাঝে নিজের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ত্রাণ সহায়তা প্রদানকালে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন।

৩য় দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জকিগঞ্জের খলাছড়া এলাকায় নিজ উদ্যোগে বন্যা দুর্গতদের মাঝে নগদ অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা প্রদান করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে আল-ইসলাহর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী রায়হান, জকিগঞ্জ উপজেলা আল-ইসলাহর সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফদ্বলুর রহমান, জকিগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জুবায়ের আহমদ, ইফার মডেল কেয়ারটেকার মাওলানা সেলিম আহমদ প্রমুখ। 

গত কিছুদিন থেকে সিলেট জেলা জুড়ে টানা বৃষ্টির কারনে সুরমা- কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। বাধ ভেঙে অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় এলাকাবাসী অনেক প্রচেষ্টা করে বাধ নির্মাণ করলেও সেটি বেশিক্ষণ স্থায়ী রাখতে পারেন নি, ব্যার্থ হয় তাদের প্রচেষ্টা। এখন পানি অনেকটা কমেছে, এই মুহুর্তে দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামত  প্রয়োজন।
বর্তমানে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ২৮ সে.মি উপরে ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার ৪৪ সে. মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

দুই দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বন্যার কবলে জকিগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দারা।গত দফায় ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় ঘর ছেড়ে স্বজনের বাড়িতে, আশ্রয়কেন্দ্রে ও নিরাপদ জায়গায় আশ্রয়  নিয়েছিল হাজারো মানুষ ।

জকিগঞ্জ উপজেলার যে সব স্থানে বাধ ভেংগে বন্যার পানি ডুকছিল সেখানকার লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতি ।পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে বন্যা দেখা দেয়ায় ও ‍কৃষকের ফসলি জমি নষ্ট হওয়ায় তোপের মুখে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

পানি উন্নয়ন বোর্ডেরে উপসহকারী প্রকৌশলি মাহফুজুর রহমান ভূইয়া বলেন, জকিগঞ্জে তাদের স্টাফ ১৭ জন এর জায়গায় মাত্র ৩ জন আছেন। এতে সব জায়গা পরিদর্শন করা সম্ভব হয় না। তবে আমরা যে পরিমান টাকার বেতন পাই, সে পরিমান টাকার বরাদ্ধও জকিগঞ্জে আসে না। এমপি মহোদয় ডিও লেটার দিয়েছেন ঠিকই, তবে এখনো পর্যন্ত কোনো বরাদ্ধ আসে নাই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন