সর্বমহলের প্রসংশায় ভাসছেন মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি
ভাঙাচোরা একটি ঘরে চলছে জকিগঞ্জের শুল্ক স্টেশন অফিসের কার্যক্রম। বছরে কোটি টাকার রাজস্ব আয় হলেও উন্নয়নে কোনো ছোঁয়া লাগেনি গত ৭৭ বছরেও। জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন অফিসের অবস্থাও নাজুক। টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে নির্মিত একচালা ঘর দিয়ে চলছে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম। যেন শরণার্থী শিবিরকেই ইমিগ্রেশন অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে স্বাধীনতার পর থেকেই। এ ব্যাপারে স্থানীয়দের ক্ষোভ থাকলেও কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই।
এবার জাতীয় সংসদে এই নাজুক পরিস্থিতি ও জরাজীর্ণ অবস্থার কথা তুলে ধরলেন ধর্মমন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনের সংসদ সদস্য মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী এমপি। গতকাল সংসদ অধিবেশন চলাকালে মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী এমপি তারকা চিহ্নিত প্রশ্ন ৩৯০ উত্থাপন করে সম্পূরক প্রশ্নের মাধ্যমে জকিগঞ্জ স্থল শুল্ক স্টেশন ও ইমিগ্রেশন পুলিশ অফিসের জরাজীর্ণ নাজুক পরিস্থিতি তুলে ধরে এর উন্নয়নে জোরালো দাবী জানান। তিনি বলেন, এই জরাজীর্ণ নাজুক অবস্থা ও ভোগান্তির কারনে রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের সম্মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান জানান, জকিগঞ্জের কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিসের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়া হবে। এতোদিন পরে জকিগঞ্জ কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন অফিসের জরাজীর্ণ নাজুক পরিস্থিত ও যাত্রী ভোগান্তির কথা জাতীয় সংসদে তুলে ধরার কারনে সর্বমহলের প্রসংশায় ভাসছেন মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী এমপি। কারণ বিগত সময়ে কোনো এমপি এখানকার নাজুক পরিস্থিতির কথা সংসদসে তুলে ধরে নাই। সাধারণ মানুষ বলছে, এতোদিন পর অবহেলিত বঞ্চিত এ জনপদের দুঃখ দূর্দশার কথা জাতির সামনে তুলে ধরে উন্নয়ন করার একজন মানুষ এবার জকিগঞ্জ-কানাইঘাট বাসী পেল।
১৯৪৭ সালে ছোট পরিসরে অস্থায়ীভাবে পাঁচটি পাকা ঘর নির্মাণ করে শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম চালু হয়। দীর্ঘ ৭৭ বছর ধরে সংস্কার বিহীন জরাজীর্ণ আধাপাকা ঘরগুলোতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এখানে নেই প্রয়োজনীয় আসবাব, দরজা-জানালা ভাঙা, ফেটে গেছে দেয়াল, খসে পড়ছে দেয়ালের আস্তর, চালের টিনে ছিদ্র। রাস্তা থেকে ভিটা নিচু থাকায় বৃষ্টির পানি সহজেই ঢুকে পড়ে অফিসে। আসবাবপত্রের অপ্রতুলতায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আটককৃত মালপত্র বৃষ্টির পানিতে ভিজে নষ্ট হয়।
জমিসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ২০০৬ সালে ফেরত গেছে ভবন নির্মাণের বরাদ্দ প্রায় দুই কোটি টাকা। এ শুল্ক স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন যাত্রী ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরসহ বিভিন্ন রাজ্যে যাতায়াত করে।
আমদানিনির্ভর এ স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৮-১০টি ট্রাকে করে কমলা, আদা, শুঁটকি, পান, কমলা, কয়লা, যন্ত্রাংশ সাতকরা, আঙুর, আপেলসহ বিভিন্ন ফলমূল আমদানি এবং বাংলাদেশ থেকে মশারির কাপড়, সাবান রপ্তানি হয়। প্রতিবছর এ স্টেশন থেকে প্রায় চার থেকে পাঁচ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়ে থাকে অথচ শুল্ক স্টেশনটি উন্নয়নে কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।