মাওলানা তর্কবাগীশ ও আজকের আওয়ামীলীগ তরুণ প্রজন্ম

আবদুল্লাহ আল ফারুক ::::
আজকের তরুণ আওয়ামী লীগাররা কি জানে,  মাদ্রাসা পড়ুয়া এই শূভ্র দাড়ি শোভিত আলেম মানুষটি আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় সভাপতি। যার অধীনে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। 

সময়কাল : ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ সালের ফেব্রুয়ারি। দলটির প্রথম সভাপতিও যে আরেকজন মাদ্রাসা পড়ুয়া আলেম, সে কথা না হয় আজ অনুল্লেখ্য রইল।

এই সেই আলেম, যিনি ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলাভাষার অধিকার আদায়ে সংগ্রামরত ছাত্র-জনতার উপর পুলিশি নির্যাতনের সংবাদ পেয়ে প্রাদেশিক পরিষদ থেকে বেরিয়ে এসে মহান ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দান করেন।

এই সেই আলেম, যিনি আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য হিসেবে পাকিস্তান গণপরিষদে ১৯৫৫ সালের ১২ই আগস্ট প্রথম বাংলা ভাষায় বক্তৃতা করেন।

আজকের আওয়ামী লীগাররা কি জানে, তাদের প্রিয় রাজনৈতিক দলের এই দ্বিতীয় সভাপতি ১৯২৩ সালে মহানবী (সা.)-এর বিরুদ্ধে রচিত অশ্লীল গ্রন্থ "রঙ্গীলা রসুল" এবং আর্যসমাজের শুদ্ধি অভিযানের বিরুদ্ধে মুসলমানদের সংঘটিত করে এক দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলেন।

সে সময় তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এতো বেশি বাহাস (বিতর্কসভা) করেছেন যে, তাঁকে সাধারণ জনগণ ‘তর্কবাগীশ’ (বিতার্কিক) উপাধিতে ভূষিত করেন। হায়, কতই না ভালো হতো, যদি সেই সভাপতির আদর্শের ওপর দলটি অবিচল থাকতো।

আজকের সুশীল সমাজ কি স্বীকার করবে যে, আপদমস্তক ধর্মীয় পোশাকে আবৃত এই আলেমই সর্বপ্রথম বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেন।

আজকের শিক্ষিতসমাজ কি জানে যে, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় পরিষদের (জাতীয় সংসদ) প্রথম সভাপতি হিসাবে মাওলানা তর্কবাগীশ সর্বপ্রথম বাংলায় যে সংসদীয় কার্যপ্রণালী প্রবর্তন করেন তা আজও চালু আছে।

জি, তিনিই হলেন মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ রহ.।

১৯৮৬ সালের ২০ আগস্ট ভাষা আন্দোলনের সিংহপুরুষ, সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তীতূল্য প্রবাদপুরুষ মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ রহ. ইনতিকাল করেন। (আল্লাহ তাঁকে মাগফিরাত নসিব করুন)।

অবাক লাগে, দলের এমন গুরুত্বপূর্ণ সভাপতির মৃত্যুর দিনটিতেও খোদ রাজনৈতিক দলটি নিরুত্তাপ।
নবীনতর পূর্বতন