সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত :::
সিলেটের পরিবহন সেক্টরে অবশেষে পতন হলো ‘ফলিক সাম্রাজ্য’র। ১ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে সিলেট জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি. ন-১৪১৮)-এর ২১ তম ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনে সভাপতি পদে লড়াই করে হেরে গেছেন আলোচিত-সমালোচিত সেলিম আহমদ ফলিক। নতুন সভাপতি হয়েছেন ময়নুল ইসলাম।
অনিয়ম, দুর্নীতি, আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিককে সংগঠনের কার্যনিবাহীর কমিটির সভায় সংবিধানের ২৬ গ ধারা মোতাবেক বহিস্কার করা হয়েছিলো। কিন্তু এই বহিস্কার মেনে নেননি ফলিক মিয়া। ফলে উত্তপ্ত হয়ে সিলেটে পরিবহন শ্রমিক অঙ্গন।
ফলিক মিয়ার একগোয়ামী ও ক্ষমতার দাপটে অতিষ্ট শ্রমিকরা গত ২ জুলাই কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের আসমা ম্যানশনের সামনে এক সভার আয়োজন করে। সভা চলাকালীন সময়ে সেলিম আহমদ ফলিকের ছেলে রোকন আল সামি বন্দুক দিয়ে শ্রমিকদের সভায় অতর্কিত ভাবে গুলি এবং ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় দুই ঘন্টাব্যাপী তুমুল সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে প্রায় ৫০ জন শ্রমিক আহত হয়।
পরে দক্ষিণ সুরমা থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাৎক্ষনিক ঘটনার মিমাংসার স্বার্থে সড়ক পরিবহনের কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও সিলেট জেলা ট্রাক শ্রমিক ইনিয়নের কয়েকজন নেতা বিষয়টি সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন। পরে কয়েক দফায় জেলার ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের কয়েকজন নেতা ও শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়র নেতারা সভাপতি ফলিক মিয়াকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় নি। কল্যান ফান্ডের ২ কোটি টাকা ও সড়ক পরিবহনের নিজস্ব ৪ টি গাড়ি বিক্রির টাকা কয়েক মাসের গাড়ীর ইনকামসহ টাকার হিসাব দিতে পারেন নি। পরে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ বর্তমান কার্যনিবাহী কমিটির কাছে এ ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তাই বাধ্য হয়ে সিলেট জেলার সড়ক পরিবহনের বর্তমান কমিটির সকল সদস্যগন গত বছরের ৯ জুলাই সংগঠনের কার্যালয়ে এক সভায় সংগঠনের শৃংখলা ভঙ্গ টাকা আত্মস্বাৎ, অনিয়ম ও দূর্নীতির কারনে সংগঠনের সংবিধানের ২৬ এর গ ধারা মোতাবেক সভাপতি সেলিম আহদ ফলিককে বহিস্কার করা হয়। কিন্তু সেলিম আহমদ ফলিক এ বহিস্কার মেনে নিতে না পেরে ফেইছ বুক লাইভের মাধ্যমে পাল্টা প্রতিবাদ জানান। এমনকি শ্রমিকদের নানা হুমকি ও পাল্টা বহিষ্কারের আলটিমেটাম দেন।
পরে ২৫ জুলাই সিলেট জেলা সড়ক পরিবগণ শ্রমিক ইউনিয়নের কার্য্যালয় খোলা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে থমথমে অবস্থার বিরাজ করলে স্থানীয় ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ তৌফিক বক্স লিপন ও দক্ষিণ সুরমা থানার ওসি আখতার হোসেনের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত হয়।