সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত :::
জকিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচিত হয়েছেন সতন্ত্রপ্রার্থী মোঃ আব্দুল আহাদ। তিনি সাবেক মেয়র মরহুম আনোয়ার হোসেন সুনাউল্লা’র পুত্র ও সাবেক কাউন্সিলর। তিনি নারিকেল গাছ প্রতিকে ২০৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ফারুক আহমদ জগ প্রতিকে পেয়েছেন ২০৮১ ভোট। মাত্র ২ ভোটের ব্যবধানে আব্দুল আহাদ বিজয়ী হন। এছাড়া মেয়র পদে মোবাইল প্রতিকে কাজী হিফজুর রহমান পেয়েছেন ১৯৮৫ ভোট।
এদিকে সবচেয়ে আলোচিত ছিল দলীয় প্রতিক নৌকা, লাঙ্গল ও ধানের শীষ নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে জামানত হারিয়ে যথাক্রমের ৫ম, ৬ষ্ট ও ৭ম স্থান অর্জন করেছেন সাবেক মেয়র আব্দুল মালেক ফারুক, হাজী খলিল উদ্দীন ও ইকবাল আহমদ তাপাদার। এর মধ্যে টক অব দ্যা জকিগঞ্জ হচ্ছে সাবেক মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদের ভূমিদস পরাজয়। যা জকিগঞ্জের ইতিহাসে নজীরবিহীন হয়ে থাকবে।
জামানত হারালেন ৫ জন
--------------------------------
এবারের নির্বাচনে ৫ মেয়র প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগ ভোট না পেলে কোনো প্রার্থী জামানত হারান। এই নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৯৮৪০টি। সে হিসেবে জামানত রক্ষা করতে ভোট দরকার ১২১৭টি। জামানত হারানো প্রার্থীরা হলেন খলিল উদ্দিন (নৌকা) ৬৬৯ ভোট, ইকবাল আহমদ (ধানেরশীষ) ৬০৭ ভোট, আব্দুল মালেক ফারুক (লাঙ্গল) ৭৫৯ ভোট, আব্দুল্লাহ আল মামুন হিরা (চামচ)১৮৫ ভোট এবং জাফরুল ইসলাম (হ্যাঙ্গার)১১৫৭ ভোট।
বিভিন্ন ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলরগন
---------------------------------------------------
১নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন আবুল কালাম। তিনি পেয়েছেন ৫৪২ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল জলিল পেয়েছেন ৩২৫ ভোট।
২নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্ড আল-ইসলাহ'র সেক্রেটারী মোঃ রুহুল আমীন রিপন । তিনি পেয়েছেন ২৪৭ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর মাসুদ আহমদ পেয়েছেন ২৪৬ ভোট।
৩নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর সাংবাদিক রিপন আহমদ। তিনি পেয়েছেন ৬৬১ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ পেয়েছেন ৫৯৬ ভোট।
৪নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন মোঃ মাহবুবুর রহমান লিলু । তিনি পেয়েছেন ৬০৬ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর শাহাব উদ্দিন শাকিল পেয়েছেন ৬০৩ ভোট।
৫নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন বর্তমান কাউন্সিলর মোঃ কামরুজ্জামান কমরু। তিনি পেয়েছেন ৭৫৯ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী ছমির উদ্দিন পেয়েছেন ৪৮৭ ভোট।
৬নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন আলমগীর হুছাইন পুতুল । তিনি পেয়েছেন ৩৩২ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর দেলওয়ার হোসেন নজরুল পেয়েছেন ৩২৫ ভোট।
৭নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন হেলাল আহমদ। তিনি পেয়েছেন ২৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী আছদ্দর আলী পেয়েছেন ১৬৭ ভোট।
৮নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন হেলাল উদ্দিন। তিনি পেয়েছেন ৩০৩ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর শামীম আহমদ পেয়েছেন ২৯৯ ভোট।
৯নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন আমাল আহমদ। তিনি পেয়েছেন ৪৭০ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী বর্তমান কাউন্সিলর আতাউর রহমান আতাই পেয়েছেন ৩৭৪ ভোট।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরগন
---------------------------
১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন জোসনা খানম। তিনি পেয়েছেন ১৪৭৩ ভোট। তার নিকটতম সুনন্দা শুক্ল পেয়েছেন ১০৬৬ ভোট।
৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন মনারা বেগম। তিনি পেয়েছেন ১০৯৮ ভোট। তার নিকটতম দিলওয়ারা বেগম পেয়েছেন ৯১৬ ভোট।
৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে বিজয়ী হয়েছেন রীনা আক্তার। তিনি পেয়েছেন ১৩৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী ছালেহা বেগম পেয়েছেন ১১৭১ ভোট।
কারচুপির অভিযোগ
--------------------------
এদিকে কারচুপি করে ভোটের বাক্স বদলে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন সতন্ত্র প্রার্থী কাজী মাও. হিফজুর রহমান। ফেইসবুকে আপলোডকৃত এক ভিডিওতে দেখা যায় তিনি কেছরী ও বিলেরবন্দ কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ব্যালেট ভর্তি বাক্স পরির্তনের অভিযোগ আনেন এবং পরবর্তিতে তিনি এ ব্যাপারে মামলা করবেন বলেও জানান।
আরেক সতন্ত্রপ্রার্থী ফারুক আহমদ নির্বাচনে ভোট পুন:গণনার দাবী জানিয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পৌরসভার ৪, ৬ ও ৯ ওয়ার্ডে কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনের কাছে ভোট পুন:গণনার দাবী জানিয়েছেন।
সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব জানিয়েছেন, ফারুক আহমদ কয়েকটি ভোট সেন্টারে ভোট পুন:গণনার দাবী জানিয়ে রির্টানিং কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত দাবী জানিয়েছেন। এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। পুন:গণনা বিষয়ে রির্টানিং কর্মকর্তা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।