জুবায়ের আহমদ :::
মসজিদ বা মাদ্রাসার কাজে সাধারন মানুষের নিকট থেকে দান হিসাবে চাদা তুলা হয়। অনেক সময় দেখা যায়, দাতাদের মধ্যে অনেকে হারাম সম্পদ থেকে দান করে থাকেন। যেমন চুরি, ডাকাতি, জুয়া, গরীবের টাকা আত্মসাৎ, ঘুষ ও নামে-বেনামে সুদের ব্যাবসা থেকে উপার্জিত সম্পদ ইত্যাদি।
কিন্তু আদৌ সেই টাকা নিয়ে আমরা মসজিদ মাদ্রাসার কাজে লাগাতে পারব কি না আমাদের অনেকের জানা নেই, বা জানা স্বত্তেও নিচ্চি।
আসুন কুরআন-হাদিসের আলোকে এ বিষয় সম্পর্কে কি বলা হয়েছে একটু জেনে নেই-
.
কুরআন -হাদিসে স্পষ্ট বর্নিত রয়েছে, যে ব্যাক্তি হারাম উপার্জনকৃত সম্পদ থেকে যত রকম কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য, দান-দক্ষিণা যা করবে সবই হারাম। এমনকি তার স্ত্রী সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের খাবারের ব্যবস্থা করলে সেই খাবারও হারাম হবে। তবে স্ত্রীলোক এবং শিশুরা এর জন্য দায়ী হবে না।
আর সুদের ব্যাবসা তো স্পষ্ট হারাম। সুদখোরকে কুরআনের ভাষায় আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধকারী হিসেবে বলা হয়েছে। আরোও বলা হয়েছে, যে ব্যাক্তি সুদের ব্যাবসা করল, সে যেন তার আপন মায়ের সাথে যিনা (ব্যাভিচার) করল। নাউযুবিল্লাহ।
সুতরাং হারাম টাকা মসজিদ মাদ্রাসার কাজে ব্যবহার করা সম্পূর্ন হারাম। তাই মসজিদ মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের উচিত হারাম টাকা গ্রহণ না করা। যারা টাকা গ্রহন করেছেন তাদের উচিত উক্ত টাকা দাতার কাছে ফেরত দেয়া। যেন তারা লজ্জা পেয়ে হারাম পেশা ছেড়ে দেয়।
তারপরও যে বা যারা এই হারাম টাকা মসজিদ-মাদ্রাসায় জেনে শুনে, স্ব-প্রনোদিত হয়ে ব্যবহার করেছেন, তারাও সেই হারাম উপার্জনকারীর মত গুনাহগার হবেন।
বিশেষত: হারাম টাকা কিছুতেই মসজিদের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কারন যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তার রাসুল (স) এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত, তার টাকা কিভাবে আল্লাহর ঘরের জন্য গ্রহন করবেন। আল্লাহ কি এত অভাবে রয়েছেন তার টাকার জন্য।
মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে ইরশাদ করেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَنفِقُوا مِن طَيِّبَاتِ مَا كَسَبْتُمْ وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُم مِّنَ الْأَرْضِ ۖ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنفِقُونَ وَلَسْتُم بِآخِذِيهِ إِلَّا أَن تُغْمِضُوا فِيهِ ۚ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ حَمِيدٌ [٢:٢٦٧]
অর্থাৎ-
হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট বস্তু ব্যয় কর এবং তা থেকে নিকৃষ্ট জিনিস ব্যয় করতে মনস্থ করো না। কেননা, তা তোমরা কখনও গ্রহণ করবে না; তবে যদি তোমরা চোখ বন্ধ করে নিয়ে নাও। জেনে রেখো, আল্লাহ অভাবমুক্ত, প্রশংসিত।:
(সূরা বাকারা-২৬৭)