সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত :::
ভারতের দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদীদের সহিসংতার প্রতিবাদে সিলেট থেকে কঠোর কর্মসূচি আসছে বলে জানা গেছে। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকেলে এক জরুরী সভারও আয়োজন করেছে সিলেটের সমমনা ইসলামী দলগুলো। এতে সিলেটের সমমনা ইসলামী দল ও নগরের সকল ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকবেন।
জানা গেছে, বৈঠকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, আনজুমানে আল-ইসলাহ, ইসলামী ঐক্যজোট, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস সহ বন্ধুপ্রতিম ইসলামী দলগুলোর সিলেটের নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে, সিলেট থেকে সমমনা ইসলামী দলের ব্যানারে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও, লং মার্চ ও রোড মার্চ কর্মসূচি পালন করা হতে পারে। এ নিয়ে বেশ কয়েকজন ইসলামী দলের নেতা ইতিবাচক মন্তব্যও করেছেন।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আসতে দেয়া হবে না বলে কঠোর হুশিয়ারি দিচ্ছেন সিলেটের সর্বস্তরের মুসলিম জনতা। বলছেন, মোদি আসলে বিমানবন্দর থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত রক্তের বন্যা বইবে। অনেকে বলছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী ছিলেন। কিন্ত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন অর্থাৎ মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক মোদিকে কেন আমন্ত্রণ করা হচ্ছে? আমরা মোদিকে মুজিববর্ষের অতিথি হিসেবে দেখতে চাই না। মোদিকে বয়কট করতে মরিয়া হয়ে উঠছেন সিলেটের সর্বস্তরের তৌহিদী জনতারা।
মুজিববর্ষের অনুষ্ঠান যত ঘনিয়ে আসছে ততই জোরালো হচ্ছে ‘মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে মোদিকে অতিথি হিসেবে দেখতে চাই না’।
আনজুমানে আল-ইসলাহ সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাও. আজির উদ্দিন পাশা বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে সিলেটে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। মানবতার স্বার্থে সরকারের উচিত নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে বয়কট করা।’
সিলেট জেলা জমিয়ত নেতা মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘ভারতে চলমান সহিংসতা ইস্যুতে আগামী শুক্রবার সমমনা ইসলামী দলগুলোর বিক্ষোভ কর্মসূচি আছে। এই কর্মসূচির বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। শুধু সমমনা ইসলামী দলগুলোই নয়, সিলেট নগরীর কাজীরবাজার মাদরাসা, দরগাহ মাদরাসা, নয়াসড়ক মাদরাসাহ, ভার্থখলা মাদরাসাও বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদেরও বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।’
দিল্লি সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইসলামী ঐক্যজোট সিলেট জেলা শাখার যগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ক.ম. এনামুল হক মামুন বলেন, ‘আমরা আপামর জনতাকে সাথে নিয়ে আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব। আমরা চাই না সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদি মুজিববর্ষে অতিথি হিসেবে আসুক। আশা করছি সরকার আমাদের চাওয়াকে মূল্যায়ন করবে।’
সিলেট থেকে সমমনা ইসলামী দলের ব্যানারে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও, লং মার্চ ও রোড মার্চ কর্মসূচির ইঙ্গিত দিয়ে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (একাংশ) সহ-সভাপতি সাবেক সাংসদ অ্যাডভোকেট মাওলানা শাহীনূর পাশা চৌধুরী বলেন, ‘আগামীকাল সমমনা ইসলামী দলগুলোর বৈঠকের কথা রয়েছে। এই বৈঠকে ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও, লং মার্চ ও রোড মাচসহ বিভিন্ন কর্মসূচির সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আলোচনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভারতের মুসলমানদের উপর হামলা বিশ্বের কোনো বিবেকবান মানুষ সহ্য করতে পারে না। ভারত সরকার মুসলমানদের রক্ত নিয়ে যে খেলা করছে তার শাস্তি মোদি সরকারকে পেতেই হবে। বাংলাদেশ সরকারের উচিত বাংলাদেশে মোদিকে বয়কট করা।’
উল্লেখ্য- সিলেটের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিদিনই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন হচ্ছে। ডান-বাম উভয় মতাদর্শী সংগঠনগুলো সিলেটে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করছে। এমনকি মোদির প্রতিকৃতিতে জুতা পেটা ও আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে।