আউলিয়ায়ে কেরামের শানে বেয়াদবী ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

জুবায়ের  আহমদ ::::
আলেম-উলামা ও ওলী-আউলিয়াগন হলেন নবীদের উত্তরসুরী, রাব্বুল ইজ্জতের পরম বন্ধু। পবিত্র কুরআন মাজীদে রাব্বুল ইজ্জত ঘোষণা করেন-'আলা ইন্না আউলিয়াল্লাহি লা খাউফুন আলাইহিম ওলাহুম ইয়াহজানুন'। অর্থাৎ নিশ্চয় আল্লাহর ওলীদের কোন ভয় নেই, কোন চিন্তা নেই'।

প্রসিদ্ধ কিতাবসমুহে তাঁদের শানে একটি বাণী রয়েছে, তা হল- 'আউলিয়ায়ে হাজিহিল উম্মতু- কা আম্বিয়ায়ে বনী ইসরাইল'। অর্থাৎ এই উম্মতের আউলিয়াগন বনী ইসরাইলের নবীদের সমতুল্য। নবীগন হলে মানুষের মধ্যে সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী। আর উম্মতের মধ্যে উম্মতে মোহাম্মদী হলেন সর্বোচ্চ মর্যাদার। অন্যান্য উম্মতের চেয়ে এই উম্মতের আলেম উলামা, পীর আউলিয়াগন বিশেষ সম্মানের অধিকারী। সুতরাং আল্লাহ যাদের বিশেষ সম্মান দিয়েছেন, তাদের যারা অসম্মান বা তাদের সাথে বেয়াদবী করে, তাদের দুনিয়া ও আখেরাতে ভয়াবহ পরিনাম ভোগ করতে হবে।

ইতিহাস সাক্ষী ওলী আউলিয়া এবং আল্লাহর মাহবুব বান্দাদের সাথে যারাই দৃষ্টতা দেখিয়েছে তারা ইহজগতে লাঞ্চিত, অপমানিত ও সমাজের মানুষের কাছে বরাবরই ঘৃনার পাত্রে পরিনত হয়েছে।

নিকট অতীতে সুলতানুল হিন্দ খাজা মাঈনুদ্দীন চিশতী আজমেরী (রহ.) এর সাথে রাজা পৃথ্বীরাজ যেমন পারেনি, সুলতানে সিলেট শাহজালাল ইয়ামেনী (রহ.) এর সাথে যেমন রাজা গৌড়গোবিন্দ পারেনি, তেমনি যুগে যুগে আল্লাহর ওলীদের শানে বেয়াদবী করে কেউ রেহাই পায়নি, আল্লাহ তাদের লাঞ্চিত অপমানিত করেছেন।

লোকমুখে একটি কথা প্রচলিত আছে যে- 'কার উসিলায় সিন্নি খাইলায়, মোল্লা চিনলায় না'।
কাদের মেহনত ও কুরবানীর ফসলে আপনি/আমি আজ মুসলমান? কারা এই দেশ আবাদ করে আমাদের উম্মতে মোহাম্মদী হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন? কারা আমাদের মাথা থেকে টিকি সরিয়ে টুপি পরিয়েছেন? কারা আমাদের ধুতির পরিবর্তে লুঙ্গি দিয়ে আমাদের সভ্য করেছেন? কারা আমাদের নামের আগে 'শ্রীযুক্ত' শব্দের পরিবর্তে মুহাম্মদ জুড়ে দিয়েছেন? সর্বোপরি কাদের উসিলায় আমরা আল্লাহর কালাম, নামাজ-রোযা, হালাল-হারাম জেনেছি? কোন খবর রাখেন মিয়া? নাকি অকৃতজ্ঞ হয়ে রোজ কিয়ামতে রাসুলে আকরাম (সা.)-এর সামনে মুখ দেখাবেন টিক করেছেন?

আজ আউলিয়ায়ে কেরামের কুরবানীর নযরানা স্বরুপ কোন প্রতিষ্ঠানের তোরণে আল্লাহর ওলীর নাম মুছে দিয়ে হাজারো মানুষের হৃদয়ে আঘাত করছেন। করেন, অসুবিদা নেই। শুধু জেনে রাখুন, পবিত্র কুরআনের বানী- ও মাকারু ও মাকরাল্লাহ, ওয়াল্লাহু খাইরুল মা-কিরীন।

কোন বিষয়ে একমত না হলে যথাযথ ফোরামে আলোচনা করতে পারতেন, সবাই সব বিষয়ে একমত হবে এমন কোন কথা নেই। মতানৈক্য থাকাটা স্বাভাবিক। তাই বলে আপনি এমন আত্মঘাতি হবেন, তা মেনে নেয়া কষ্টের। সুতরাং আপনি যত বড়ই প্রভাবশালী, প্রতাপশালী, বড় মোচওয়ালা নেতা হন নাই কেন, সাবধান হওয়ার এখনই সময়। দ্রুত তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। না হয় ইতিহাসের আস্তাকুড়ে আপনার জায়গা হবে।
....................................................
লেখক : সম্পাদক - সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত।

নবীনতর পূর্বতন