সিলেটে কাশ্মীর ইস্যুতে মাও. হুছামুদ্দীন চৌধুরী : ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন

সাপ্তাহিক সবুজ প্রান্ত ::::
বাংলাদেশ আনজুমানে আল-ইসলাহ'র কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী বলেছেন, আজ কাশ্মীরের মানুষদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। তাদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। পুরো বিশ্ব থেকে তাদের বিচ্চিন্ন করে রাখা হয়েছে। এমতাবস্তায় তাদের পাশে বাংলাদেশের মুসলমান ও সরকারকে পাশে দাড়াতে হবে। কাশ্মিরের মুসলমানেরা ভারত সরকার কর্তৃক নির্যাতিত। কাশ্মিরের মুসলমানদের উপর আঘাত করে গোটা বিশ্বের মুসলমানদের আঘাত দেয়া হয়েছে। আজকে কাশ্মিরের জনগনের ঈদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে, অথচ তাদেরকে আগ্রাসী সরকার ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তাদের সাথে উপহাস করছে। তিনি কাশ্মিরের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, তাদের কী দূষ ছিল যে, তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হল, রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, দোকানপাট, ইন্টারনেটসহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করে দেয়া হল। এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই তাদের অন্ন-বস্ত্রের সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা এ পরিস্থিতির দ্রুত নিরসন চাই। তিনি জাতিসংঘকে উদ্যেশ্য করে বলেন, তারা আজ এ বিষয়ে বোবার ভূমিকা পালন করছে, এক্ষেত্রে ওআইসিকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্বের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।

তিনি বাংলাদেশ সরকারের উদ্যেশ্যে বলেন, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সাহসী অবস্থান ও রোহিংগাদের পক্ষে মানবতার দৃষ্টান্ত দেখিয়ে সরকার বিশ্ব মহলে যে সুনাম অর্জন করেছে আমরা কাশ্মির ইস্যুতেও সরকারের সেরকম সুনাম শুনতে চাই। তিনি কাশ্মিরের উপর সকল অমানবিকতা বন্ধ করতে ভারতকে চাপ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, কাশ্মিরের পক্ষে অবস্থান নিলে  এদেশের ষোল কোটি মুসলমান আপনাদের পাশে থাকবে।

শুক্রবার (৯ আগস্ট) বাদ জুমা বাংলাদেশ আনজুমানে আল-ইসলাহ ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামিযে ইসলামীয় সিলেট’এর উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভাল আছে। প্রয়োজনে এ সম্পর্ক ছিন্ন করা করুন। আজ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সামনে ঈমানী পরীক্ষা দন্ডয়মান।

এ সময় মাও. হুছামুদ্দীন চৌধুরী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান জানিয়ে আরও বলেন, আগামীতে আপনার ভারতে দিল্লী সফরের কথা রয়েছ। বাংলার ১৬ কোটি মুসলমানদের দাবির মুখে আপনি এ সফর বাতিল করুন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে কাশ্মীরীদের অধিকার হরন করেছে। রাজ্য মুখ্যমন্ত্রীদের গ্রেফতার করে পর্যটকদের সরিয়ে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে তাঁরা ক্লান্ত হয়নি। ১৪৪ ধারা জারী করে ইন্টারনেট পর্যন্ত বন্ধ করেছে। তাই কাশ্মীরের অসহায় মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো সকল মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্ব।

এর আগে হাজার হাজার মানুষের অংশগ্রহণে জুমু’আর নামাজের পর তালামীযের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল নগরীর সোবহানীঘাটস্থ হাজী নওয়াব আলী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কোর্ট পয়েন্টে সমাবেশে মিলিত হয়।

কেন্দ্রীয় আল ইসলাহর সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা ছরওয়ারে জাহান এর সভাপতিত্বে ও সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা এবং সিলেট পশ্চিম জেলা তালামীযের সভাপতি শেখ আলী হায়দারের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, আনজুমানে আল ইসলাহর সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মাওলানা মঈনূল ইসলাম পারভেজ, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি আখতার হোসাইন জাহেদ ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূনূর রহমান লেখন।

মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও সিলেট জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা আবু জাফর নুমান, অর্থ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা আবু ছালেহ মো: কুতবুল আলম, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা নজমূল হুদা খান, অফিস সম্পাদক মাওলানা আতাউর রহমান, তালামীযের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি দুলাল আহমদ,মুহিবুর রহমান, মাছুম আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ উসমান গণি, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজতবা হাসান চৌধুরী নুমান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালীউর রহমান সানী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আহমদ আল জামিল।
উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যন মাওলানা হাবিবুর রহমান, জকিগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুস সবুর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।

নবীনতর পূর্বতন